Showing posts with label ইভেন্ট. Show all posts
Showing posts with label ইভেন্ট. Show all posts

Sunday, June 27, 2021

মানমন্দিরে আকাশ পর্যবেক্ষণ

মানমন্দিরে আকাশ পর্যবেক্ষণ

মানমন্দির (Observatory) হলো আকাশ পর্যবেক্ষণ এবং মহাকাশের বিভিন্নবস্তুর তথ্য সংগ্রহের জন্য বিশেষভাবে তৈরি যন্ত্রপাতিসমৃদ্ধ গবেষণাগার। জ্যোতির্বিজ্ঞান, জলবায়ুবিজ্ঞান, ভূতত্ত্ব, গণিত ও পদার্থবিজ্ঞান ইত্যাদি বিষয়ের গবেষণার জন্যই সাধারণত মানমন্দির স্হাপন করা হয়ে থাকে। মানমন্দির কোন ধর্মস্হান ও পর্যটন কেন্দ্র নয় । মানমন্দির হলো বিজ্ঞানী ও গবেষকদের স্হান ।
মানমন্দির বানানোর জন্য নির্দিষ্ট কোন বিন্দু বা স্হানকে নির্বাচন করা হয় না । কারণ মানমন্দিরের প্রধান উদ্দেশ্য আকাশ পর্যবেক্ষণ ও আকাশ নিয়ে গবেষণা করা । 

মানমন্দির বানানো হয় জনবিরল স্হানে যেখানে আকাশ পরিস্কার থাকে, বায়ু দুষণ থাকে না, আলোক দূষণ হয় না, বায়ুতে আদ্রতা থাকে না, ধোয়া ও ধুলা-বালি থাকে না । 

যে কোন বিশ্ববিদ্যালয় বা ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের গারো পাহাড় ও চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ী এলাকায় মানমন্দির বানাতে পারে । কারণ এসব এলাকায় মানমন্দির বানানোর যথাযথ পরিবেশ ও আবহাওয়া রয়েছে । আমরাও এমন ধরণের এলাকায় মানমন্দির বানাতে আগ্রহী । যারা এই মহত্ উদ্যোগের সাথে যুক্ত হতে চান তারা আমাদের সাথে যুক্ত হতে পারেন । 

 Meade's LX600 12 টেলিস্কোপ হবে আমাদের প্রাথমিক পদক্ষেপ যা আমাদের এই মানমন্দিরে স্হান পাবে ।  

আমাদের মানমন্দিরের সাথে থাকবে – বাংলাদেশি ওয়াটার গার্ডেন, রিসোর্ট, বিজ্ঞান যাদুঘর, হার্বেরিয়াম, প্ল্যানেটেরিয়াম ও সমৃদ্ধ লাইব্রেরী । আমাদের এই প্রকল্প সমন্বিত সাইন্স টুরিজম ও রিচার্সের অংশ হিসেবে তৈরী করা হবে । 

 https://www.facebook.com/bdaunion/

Saturday, June 26, 2021

পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখার উপায় -১

পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখার উপায় -১

“একটি বেস্ট প্র্যাকটিস, পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখার উপায়” লিখেছেন : কাজি জহিরুল ইসলাম 

শনিবার সকালে ঘুম থেকে উঠে যখন মর্নিং ওয়াকে বেরুলাম, তখন আমার রিভিয়েরার বাড়িকে প্রদক্ষিণ করে ছুটে যাওয়া দুই কিলোমিটারের সার্কেলটি একেবারে অচেনা লাগছে । রাস্তায় একটাও ঝরাপাতা নেই, ফুটপাথের ভাঙা কংক্রিটের ফাক গলে গজিয়ে ওঠা ঘাসের ডগা নেই । পাইনের কিরিকিরি পাতার যে আস্তরণ রোজ সকালে মাড়িয়ে পা ফেলি সেখানে এখন ঝকঝকে পিচঢালা পথের কালো চিতানো বুক । পথের ওপর একটাও সিগেরেটের বাট নেই, আবর্জনায় নাক ডুবিয়ে পড়ে থাকা ছেঁড়া পলিথিনের ব্যাগ নেই, এমন কি পথের কোথাও সাত সকালে কে এসে অমন সাফ করে দিয়ে গেল? 

আমাদের সকল উদ্বেগ, উৎকন্ঠার অবসান ঘটলো আধ কিলোমিটার পথ পার হওয়ার পরেই । যেন একটা উৎসবে মেতে উঠেছে সার্কেলের দুই পাশে বসাবসারত বাসা-বাড়ির ছয় বছরের শিশু থেকে শুরু করে ২৩/২৪ বছর বয়েসী তরুণী/তরুণ । প্রত্যের হাতে ঝাঁটা, মোশেইদ (রামদা জাতীয় ধারালো অস্ত্র, মাথার দিকটা প্রায় তিন ইঞ্চি চ্যাপ্টা), ময়লা তোলার কোদাল, খুন্তি, দুই/তিন মিটার পর পর নীল রঙ্গের বালতির সারি । আর অপেক্ষাকৃকত বড়রা, ময়লাভর্তি ভ্যানগুলো ঠেলতে ঠেলতে নিয়ে যাচ্ছে একটা নির্দিষ্ট স্হানে ।

এক্তেদার সাহেব অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থেকে বল্লেন, ও তাহলে এই হলো ঘটনা ! হাঁ, এই হলো ঘটনা । ঘটনাটি আমি এজন্য লিখছি, এটিকে একটি বেস্ট প্র্যাকটিস হিসাবে চিহ্নিত করে আমি বাংলাদেশের মানুষকে জানাতে চাই ।
আজ আবিদজানের যে সব ছেলে-মেয়েরা নীল বালতি নিয়ে ভোর পাঁচটায় রাস্তায় নেমে এসেছে নিজের পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য, তারা সবাই আমাদের মতোই তৃতীয় বিশ্বে বসবাসকারী স্কুল কলেজে পড়ুয়া ছেলে-মেয়ে । এটা ওদের দীর্ঘ দিনের প্র্যাকটিস । ফরাসীরা দীর্ঘ ঔপনিবেশকালে অন্য অনেক জিনিজের মতো পরিচ্ছন্নতাও যে একটি শৈল্পিক সৌন্দর্য এই বোধ ওদের মগজের মধ্যে ঢুকিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে, যা ইংরেজ আমাদের শেখাতে পারেনি । 

এই পরিচ্ছন্নতা অভিযানটি ওরা চালায় মাসে একদিন, একটি নির্দিষ্ট শনিবারে । করো চোখে মুখে ক্লান্তির ছাপ নেই, অবসন্নতা নেই । সকলেই যেন একটি উৎসব আনন্দে উদ্দেপিত, উদ্বেলিত । যেন এক মহৎ কর্মযজ্ঞে শামিল হতে পেরে ধন্য সবাই । মুখে হাসি নিয়ে ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা ভোরের ফুরফুরে হাওয়ার মতো উডে বেড়াচ্ছে । একটু যারা বড় তারা নিজেরা কাজ করার পাশাপাশি অন্যদের কাজ মনিটরও করছে । যদি কোন শিশু কাজ রেখে ধুলা বালি দিয়ে খেলতে নেমে গেল, তখন হাসি দিয়ে ওকে কাজে ফিরিয়ে আনছে । ফরাসী ভাষায় এমন কিছু বলছে, অনুমাণ করছি, আজকের এই কাজ করাটাই খেলা, এমন কিছু বুঝতে পেরে শিশুটি দৌড়ে এসে কাগজ কুড়াতে শুরু করে দিলো । পিচঢালা পথটি দুই কিলোমিটারের একটি বৃত্ত রচনা করে যেখান থেকে শুরু হয়েছিলো আবার ঠিক সেখানে এসেই শেষ হয়েছে । অথবা বলা যায় পথটি কেবল অনন্তকাল ধরে বৃত্তাকারে ঘুরছেই, শেষ খুঁজে পাচ্ছে না । 


পথের ডানদিকে অর্থাৎ বৃত্তের বাইরের অংশে প্রায় পঞ্চাশ মিটার ফাঁকা জায়গা, পিচঢালা পথটির সমান্তরাল ছুটে গেছে, যা ঘাসের ঘন অবণ্য আর মাঝে মাঝে আপন মনে বেড়ে ওঠা বনবট,বিশাল মোটা মোটা নিম, পান্হনিবাস, ভোগেনভেলিয়া, মাধবলতাসহ নানান প্রজাতির বৃক্ষলতায় শোভিত । তার পেছনেই সারি সারি হলুদ রঙের তিন তলা বাড়ি । এরই একটি বাড়িতে আমার বাসা । আর বাঁ দিকে, অর্থাৎ সার্কেলের ভেতরে একই দুরত্বে গড়ে উঠেছে বিশাল জায়গা জুড়ে একেকটি নয়নাভিরাম ভিলা । এক দল তরুণ অন্তহীন উৎসাহে মেশিন চালিয়ে দু’পাশের এই ফাঁকা জায়গায় গজানো ঘাসবন ট্রিম করছে । এক দল ফুটপাথের পাথরের ফাঁকে গজানো ঘাসের ডগা কেটে সাফ করছে, এক দল রাস্তা ঝাড়ু দিচ্ছে, এক দল কোদাল নিয়ে নীল বালতিতে পাথরের ধুলি কাদা, ছেড়া কাগজ, কয়লা আবর্জনা ঝরাপাতার স্তুল তুলে নিচ্ছে । ভ্যানগাড়িগুলো কাছে এগিয়ে আসতেই ময়লাভর্তি সারি সারি নীল বালতি তাতে উপুড় হয়ে যাচ্ছে । যেন একটা প্রশিক্ষিত চেইন ওয়ার্ক । পরিস্কার করতে করতে পুরো দলটি সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, পেছনে রেখে যাচ্ছে একটি ঝকঝরে পরিচ্ছন্ন পথ ও তার পরিবেশ । 

গত জুলাই মাসে যখন ঢাকায় যাই, তখন দেখলাম গুলশান এক নম্বরেরে সেই অতি পরিচিত সার্কেলটি আর নেই । ওখানে এখন লাইট ফাইট লাগিয়ে একটা জবরদস্ত চৌরাস্তা বানানো হয়েছে, যদিও এতে জানজট আরও বেড়েছে । সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য তারই দুপাশে ছোট দুইটি আইল্যান্ডে বাগান করা হয়েছে । খবররের কাগজ কিনতে যখন ডিসিসি মার্কেটে গেলাম তখন দেখি একটি ২৪ ২৪ বছরের যুবক সেই বাগান সাফ করছে । ওর সাফ করার ধরণ দেখে আমার খুব হাসি পেল । বাগান থেকে কুড়িয়ে এসে সে ছেড়া কাগজের টুকরাগুলি পথের ওপর ছড়িয়ে দিচ্ছে । ভাবলাম, ওকে দুটো কথা বলা আমার নাগরিক দায়িত্ব । এগিয়ে গিয়ে বললাম, তুমি যে কাগজের টুকরাগুলো পথের ওপর ফেলছো, এগুলোতো বাতাসে উড়ে আবার বাগানেই ফিরে যাবে । ও খুব বিরক্ত ভঙ্গিতে আমাকে বললো, তাইলে কি করুম, আমি বললাম, একটা ব্যাগ নাও । ময়লা, আবর্জনা, কাগজের টুকরা, সিগারেট বাট এইসব কুড়িয়ে ব্যাগে ভরো । তারপর নিকটস্হ কোনো ডাস্টবিনে নিয়ে ফেল । ও বললো, ব্যাগ পামু কই ? এ প্রশ্নের উত্তর আমার কাছে নেই । তবে আমি আশা করছি ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের কাছে এর একটা সদুত্তর আছে ।

আবিদজানের এই ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের এতো গোছানো কাজ দেখে আমার কেবল গুলশানের সেই ছেলেটির কথাই মনে পড়ছে আর চোখের সামনে ভেসে উঠেছে ঢাকা শহরের, আমাদের বাড়ি ঘরের চারপাশের, আবর্জনাময় নোংরা পরিবেশের অসহায় চিত্রটি । 

আবিদজান, আইভরিকোস্ট ৩১ মার্চ ২০০৬

Wednesday, November 18, 2020