Showing posts with label ভূগোল. Show all posts
Showing posts with label ভূগোল. Show all posts

Saturday, November 25, 2023

ভারত-বাংলাদেশ সমুদ্রসীমা বিতর্ক, মহীসোপান নিয়ে বিতর্ক

ভারত-বাংলাদেশ সমুদ্রসীমা বিতর্ক, মহীসোপান নিয়ে বিতর্ক

বাংলাদেশ জাতিসংঘে মহীসোপানের যে দাবি দিয়েছে, সেটির আয়তন ৮ হাজার ৭শ বর্গকিলোমিটার। 

আর বিতর্কিত 'গ্রে এরিয়া' বা ধূসর এলাকার আয়তন ৭২০ বর্গকিলোমিটার।

ভারত আদালতের রায় মেনে তাদের বেইজলাইন সংশোধন করলে এই 'গ্রে এরিয়া' থাকে না।



বঙ্গোপসাগরে ভারত ও মিয়ানমারের সাথে সমুদ্রসীমার বিরোধ নিষ্পত্তি হয় আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ে। ২০১১ সালে ইটলসের রায়ে মিয়ানমারের সঙ্গে এবং ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতের রায়ে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা নির্ধারিত হয়।

সমুদ্রসীমানা নিয়ে দুটি রায়ের পর বাংলাদেশ যখন নতুন বেইজলাইন টেনে মহীসোপানের দাবি উপস্থাপন করে, তারপরই বর্তমান সংকটের শুরু।

বাংলাদেশ জাতিসংঘে মহীসোপানের দাবি প্রথম তুলে ধরে ২০১১ সালে। কিন্তু মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সীমানা বিরোধ নিষ্পত্তির পর মহীসোপানের ওই দাবি সংশোধন করে ২০২০ সালে নতুন করে কমিশনে জমা দেয়।

বাংলাদেশ সংশোধিত মহীসোপানের দাবি উপস্থাপনের ছয় মাসের মধ্যেই ভারত জাতিসংঘে চিঠি দিয়ে আপত্তি জানায়। ২০২১ সালের ১৬ই এপ্রিল ভারত জাতিসংঘে আনুষ্ঠানিক চিঠিটি দিয়ে তুলে ধরে।

ভারত সরকারের বক্তব্য হচ্ছে এটা গ্রে এরিয়ার (ধুসর এলাকা) ভেতরে পড়ে যাচ্ছে এবং ইন্ডিয়ার যে এক্সক্লুসিভ ইকনোমিক জোন তার ভেতরে পড়ে যাচ্ছে। তার মানে দু'শো নটিক্যাল মাইলের মধ্যে পড়ে যাচ্ছে।

ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে মহীসোপানের দাবি নিয়ে বর্তমান বিরোধের মূলে রয়েছে দু'দেশের বেইজলাইন। এ বেইজলাইন নিয়ে দুই দেশেরই পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ এবং আপত্তি আছে।

এ বেইজলাইন বা ভিত্তিরেখা ধরেই উপকূল থেকে সমূদ্রের ১২ নটিক্যাল মাইল টেরিটরিয়াল সী, ২শ নটিক্যাল মাইল বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং তারপর মহীসোপান পর্যন্ত পরিমাপ করা হয়।

দুদেশের বেইজলাইন সমুদ্র উপকূল জুড়ে বিভিন্ন অবস্থানে পয়েন্ট আকারে নির্ধারণ করা হয়েছে। বাংলাদেশের সংশোধিত বেইজলাইনে ৫টি পয়েন্ট আছে আর ভারতের বেইজলাইনের ৮৯টি পয়েন্ট দ্বারা বিভক্ত।

ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সীমানা নির্ধারণের পর বাংলাদেশ ২০১৫ সালে বেইজলাইন সংশোধন করে। সেই বেইজলাইনের ভিত্তিতে ২০২০ সালের অক্টোবরে জাতিসংঘের কমিশনে মহীসোপানের দাবি উপস্থাপন করে। বাংলাদেশের নতুন বেইজলাইনের ২ ও ৫ নম্বর পয়েন্টের অবস্থান নিয়ে ভারতের আপত্তি।

বাংলাদেশের নতুন বেইজলাইনের ২ ও ৫ নম্বর পয়েন্টে ব্যাপারে ২০১৭ সালের ৩রা আগস্ট ভারত জাতিসংঘের কাছে একটি চিঠি লিখে সুনির্দিষ্ট করে আপত্তি জানায়।

ওই চিঠিতে বলা হয় নতুন বেইজলাইন ধরে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা টানলে বাংলাদেশের একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল ভারতের অংশে ঢুকে পড়ে, যেখানে একটি গ্রে এরিয়া বা ধুসর এলাকা চিহ্নিত রয়েছে।

২০১৪ সালে সমুদ্রসীমা নিয়ে আদালতের রায়ের পর বাংলাদেশ নতুন করে বেইজলাইন সংশোধন করে। সেই বেইজলাইন ধরে জাতিসংঘে মহীসোপানের দাবি সংশোধিত আকারে পেশ করে করে ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে।

বাংলাদেশের বক্তব্য হলো আদালতের রায় এবং আন্তর্জাতিক আইন ও বিধি মেনেই বাংলাদেশ বেইজলাইন নির্ধারণ করেছে।

বাংলাদেশ অভিযোগ করছে যে ভারত আদালতের রায়ের পর তাদের বেইজলাইন সংশোধন করেনি। ভারত বেইজলাইন সংশোধন না করায় গ্রে এরিয়ার সমস্যা রয়ে গেছে। বিশেষ করে ভারতের বেইজলাইনের ৮৭ ও ৮৯ নম্বর পয়েন্ট নিয়ে আপত্তি রয়েছে বাংলাদেশের।

বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা নিয়ে শুরু থেকেই কাজ করছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম বিষয়াবলি ইউনিটের সচিব অবসরপ্রাপ্ত রিয়ার এ্যাডমিরাল মো. খুরশেদ আলম।

বিবিসিকে তিনি বলেন, আদালতের রায় অনুসরণ করে আইন-কানুন মেনেই বাংলাদেশ তাদের বেইজলাইন সংশোধন করেছে এবং মহীসোপানের সংশোধিত দাবি জাতিসংঘে উপস্থাপন করেছে।

"ভারতের বেইজলাইন যেটা বালাশোর উপকূল থেকে সোজা যে টানা হয়েছে, সেখানে ৮৭ নম্বর পয়েন্ট দশ কিলোমিটার সমুদ্রের ভেতর রয়েছে- যে কারণে গ্রে এরিয়া সৃষ্টি হয়।"

তিনি জানান, "এটা না থাকলেতো গ্রে এরিয়ারই সৃষ্টি হয় না। এবং পয়েন্ট ৮৯ এটা এখনো বাংলাদেশের সমূদ্রসীমার ২.৩ নটিক্যাল মাইল ভেতরে। এটা তারা এখনো সরায় নাই ২০০৯ সাল থেকে। আমরা এটাই বলেছি যে, তোমরা আপত্তি দিয়েছ, তার আগে তোমাদের কাজগুলো ঠিক করার দরকার ছিল।"

খুরশেদ আলম বলছেন, মহীসোপানের বিষয়টি এখন জাতিসংঘের কমিশনই নিস্পত্তি করবে। তবে কূটনৈতিক আলাপ-আলোচনাও অব্যাহত আছে ।

"কূটনৈতিকভাবে কথাবার্তা চলতেছে। আবার ওনারা চিঠি দিচ্ছে আমরাও দিচ্ছি। দেখা যাক এটা কূটনৈতিকভাবে যদি সমাধান হয়, ওনারা পয়েন্ট দুটো উঠিয়ে নেয় ফাইন। কিন্তু মহীসোপানের ব্যাপারে হয়তো কূটনৈতিকভাবে কিছু করার নাই, এটা জাতিসংঘ করবে।"

মহীসোপানের দাবি নিষ্পত্তি নিয়ে ভারতের সাবেক জরিপ কর্মকর্তা বিজন কুমার সাহা বলেন, আপত্তি যে যাই করুক মহীসোপানের সিদ্ধান্ত হবে বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে - এটা কেউ চাইলেই পাবে - বিষয়টা এমন নয়।

"দুটো দেশের বাউন্ডারি সেটা স্থল বা জলসীমায় হোক, সেটা একটা ম্যাটার অফ ডিমারকেশন।"

"কিন্তু এক্সক্লুসিভ ইকনোমিক জোন বা লিগ্যাল কন্টিনেন্টাল শেলফ এটা লজ অফ দা সী'তে পরিস্কারভাবে বলে দেয়া আছে - যে ২শ নটিক্যাল মাইলের পরে কতটুকু মহীসোপান পাওয়া যাবে, কী কী কারণে পাওয়া যাবে, কী করলে পাওয়া যাবে, কোথায় পাওয়া যাবে। নিশ্চয়ই কমিশন এসব বিষয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেই সিদ্ধান্ত দেবেন।"

সাগরের মহীসোপান এলাকায় পানিতে মাছ ধরার অধিকার থাকে সব দেশের। কিন্তু মহীসোপানের মূল গুরুত্ব হলো মাটির নিচের সম্পদের কারণে। মহীসোপান যে দেশের অধিকারে থাকবে, সে দেশই ওই এলাকার মাটির নিচের সম্পদের মালিক হবে। মহীসোপানে তেল গ্যাস অনুসন্ধান এবং অন্য যেকোনো খনিজ পদার্থ উত্তোলন অনুসন্ধানের জন্য এর বিরোধ নিষ্পত্তির প্রয়োজন।

Source : bbc.com/bengali/news-58671740

মহীসোপান যে কারণে গুরুত্বপূর্ণ?

মহীসোপান মূলত একটি দেশের সীমানারই অংশ। ভূখণ্ডের মতো সাগরের এই মহীসোপান নানা দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ।

দেশের ভূখণ্ডের বেসলাইন থেকে লম্বাভাবে প্রথম ২০০ মাইল একচেটিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চল বা ইইজেড। এখানে যেমন ওই দেশটি একচেটিয়াভাবে মৎস্য আহরণ করতে পারে। আবার সেখানকার সাগর তলে থাকা সকল খনিজ সম্পদের মালিকও ওই দেশ।

সেই সঙ্গে মহীসোপানের যে বর্ধিত অংশটি থাকে, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে যেমন আরও ১৫০ মাইল, সেটিও আসলে ওই দেশের একটি বর্ধিত অংশ।

এখানে উদাহরণ দিয়ে বলা হয়, বর্ধিত অংশের পানি বাংলাদেশসহ অন্য দেশ মাছ ধরতে যেমন পারবে। ফলে তার মৎস্য আহরণের সীমানা আরও বিস্তৃত হচ্ছে।

কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, এই মহীসোপান এলাকায় পানির নীচে পাওয়া সব খনিজ সম্পদের মালিক হবে দেশটি। যেমন বাংলাদেশের একচেটিয়া অঞ্চলের ২০০ মাইল আর বর্ধিত মহীসোপানের ১৫০ মাইল- এই সাড়ে তিনশো মাইলে পাওয়া যেকোনো খনিজ সম্পদের মালিক হবে বাংলাদেশ। আবার এই পুরো এলাকায় বাংলাদেশের ট্রলার ইচ্ছেমত মাছও ধরতে পারবে।

মহীসোপান সব দেশের কাছেই বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সাধারণত মহীসোপান এলাকার ভেতরে তেল-গ্যাস বা অন্য খনিজ সম্পদ পাওয়া যায়, তা উত্তোলনে খরচ কম হয়ে থাকে। ফলে সেটি উত্তোলনযোগ্য এবং ব্যবহারযোগ্য হয়ে থাকে। ফলে এই সীমানা অর্থনৈতিকভাবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

এ কারণেই অনেক সময় মহীসোপানের এলাকা নিয়ে প্রতিবেশী বিভিন্ন দেশের মধ্যে বিরোধ দেখা যায়।

অ্যাডমিরাল (অব) খুরশীদ আলম বলছেন, ''খনিজ সম্পদের কারণেই মহীসোপানের এতো গুরুত্ব। তেল, গ্যাস, সালফার, মেটালিক মডিউল, কোবাল-সব কিছুর মালিক আপনি।''

যেমন এসব এলাকার মধ্যে বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্লক রয়েছে।

২০১৪ সালে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা নিয়ে বিরোধ মীমাংসায় আন্তর্জাতিক সালিশ আদালতের এক রায়ে বাংলাদেশ নতুন প্রায় সাড়ে ১৯ হাজার বর্গকিলোমিটার সমুদ্র এলাকা পেয়েছে ।

এর মধ্য দিয়ে নিজস্ব সমুদ্রসীমার বাইরে মহীসোপানে এক বিরাট এলাকার ওপর বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

এই এলাকায় মৎস্য আহরণ ও সমুদ্রের তলদেশে প্রাকৃতিক সম্পদ অনুসন্ধান ও উত্তোলনে বাংলাদেশের অধিকার নিশ্চিত হয়েছে বলে বাংলাদেশের কর্মকর্তারা বলেছেন।

"এ রায়ের ফলে বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটারের বেশি টেরিটোরিয়াল সমুদ্র, ২০০ নটিক্যাল মাইল একচ্ছত্র অঞ্চল এবং চট্টগ্রাম উপকূল থেকে ৩৫৪ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত মহীসোপানের তলদেশ অবস্থিত সব ধরণের প্রাণীজ ও অপ্রাণীজ সম্পদের উপর সার্বভৌম অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে।" বলেছিলেন তখনকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী।

বাংলাদেশ ও ভারতের মহীসোপান ইস্যু

২০১১ সালে জাতিসংঘে মহীসোপানের নিজেদের প্রাপ্য দাবি করে আবেদন করে বাংলাদেশ। যদিও ২০২০ সালের অক্টোবরে ওই দাবির বিষয়ে সংশোধনী দেয় ঢাকা।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব) মোঃ খুরশীদ আলম বলছেন, ''মহীসোপান সব দেশেরই একটা অধিকার। সব দেশে ২০০ মাইল পর্যন্ত ইইজেড পাবে, আর সাড়ে তিনশো মাইল পর্যন্ত মহীসোপান পাবে।''

বাংলাদেশ নিজেদের মহীসোপান এলাকা দাবি করে ২০১১ সালে জাতিসংঘের মহীসোপান নির্ধারণ বিষয়ক কমিশনে (সিএলসিএস) আবেদন করেছিল।

মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সমুদ্র সীমা নির্ধারণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক মামলায় যথাক্রমে ২০১২ এবং ২০১৪ সালে প্রদত্ত রায়ে বাংলাদেশ জয়লাভ করে।

সেই রায়ে মহীসোপানের সীমানা আলাদাভাবে নির্ধারণ করার কারণে ২০২০ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশ সিএলসিএসে সংশোধনী জমা দেয়।

গত শুক্রবার ওই সীমানার ব্যাপারে আপত্তি দিয়ে ভারত বলছে, বাংলাদেশ ভূখণ্ডের যে বেসলাইনের ওপর ভিত্তি করে মহীসোপান নির্ধারণ করেছে, সেটির মাধ্যমে ভারতের মহীসোপানের একটি অংশ দাবি করছে বাংলাদেশ। এছাড়া সেখানে বঙ্গোপসাগরে থাকা গ্রে এরিয়া সম্পর্কে বাংলাদেশ কোন তথ্য দেয়নি।

এর আগে ভারত যে বেসলাইনের ভিত্তিতে মহীসোপানের দাবি তুলেছিল, সেটির বিরুদ্ধেও বাংলাদেশ ২০০৯ সালে আপত্তি জানিয়েছে। সেই আপত্তি এখনো রয়েছে।

যদিও বঙ্গোপসাগরের প্রতিবেশী আরেক দেশ মিয়ানমার বাংলাদেশের মহীসোপান দাবি ইস্যুতে কোন আপত্তি তোলেনি।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব) মোঃ খুরশেদ আলম বলছেন, ''ভারতের আপত্তির ব্যাপারে আমি আইনগত জোরালো কোন ভিত্তি দেখছি না। কারণ আমাদের মহীসোপান আদালত থেকে ফয়সালা করে দেয়া হয়েছে। সুতরাং ভারতের আপত্তির কোন আইনগত ভিত্তি নেই বলেই আমি মনে করি। তারপরেও তাদের আপত্তির বিষয়টি পরীক্ষা নিরীক্ষা করে আমরা জাতিসংঘে জবাব দেবো।''

তিনি বলছেন, আপত্তির যেসব পয়েন্ট ভারত তুলে ধরেছে, তার সঙ্গে মহীসোপানের কোন সম্পর্ক নেই। কারণ পানির বিষয়ে আপত্তির সঙ্গে তো মহীসোপানের বিষয় মেলে না।

এই বিরোধের ব্যাপারে কারা সিদ্ধান্ত দেবে?

বাংলাদেশ ও ভারতের মহীসোপান সংক্রান্ত বিরোধের ব্যাপারে সুপারিশ দেবে জাতিসংঘের মহীসোপান নির্ধারণসংক্রান্ত কমিশন (সিএলসিএস)। দুই দেশের বক্তব্য বিচার বিশ্লেষণ করে সংস্থাটি তাদের সুপারিশ জানাবে।

সেই সুপারিশের ব্যাপারেও আবার আপত্তি জানানো যাবে। তবে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে যেহেতু আদালত সীমানা নির্ধারণ করে দিয়েছে, তার বাইরে বাংলাদেশের যাওয়ার সুযোগ নেই।

''কোর্টের রায় যেটা আমরা পেয়েছি, সেটাই আমরা পাবো। সেটার ওপরেই চেয়েছিলাম যে, তাদের (জাতিসংঘের) যে একটা রোল এখানে আছে, সেটাই যেন তারা পূর্ণ করে।'' বলছিলেন মি. আলম।

কোন দেশ মানতে রাজি না হলে তারা পুনর্বিবেচনার পর আবার সিএলসিএসে যেতে পারে। কিন্তু চূড়ান্ত যে সুপারিশ তারা দেবে, সেটা সব দেশকে মানতে হয়, সেটাই নিয়ম, বলছেন অ্যাডমিরাল খুরশীদ আলম।

এখানে আদালতের মতো কোন শুনানি হয় না। তবে সিএলসিএসের যে কমিটি রয়েছে, সেখানে সংশ্লিষ্ট দেশ তথ্য-প্রমাণসহ একটি প্রেজেন্টেশন দিতে পারে।

Source : bbc.com/bengali/news-56792341

ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে বিরোধ নিষ্পত্তি হওয়ার পর বাংলাদেশ ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গ কিলোমিটারের বেশি টেরিটোরিয়াল সমুদ্র, ২০০ নটিক্যাল মাইল একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং চট্টগ্রাম উপকূল থেকে ৩৫৪ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত মহীসোপানের তলদেশে অবস্থিত সব ধরনের প্রাণিজ ও অপ্রাণিজ সম্পদের ওপর সার্বভৌম অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে।

বাংলাদেশ-ভারত সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তির রায় পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বঙ্গোপসাগরের ৫০ বর্গ কিলোমিটারের একটি গ্রে এরিয়া নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালত নির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি। আদালত রায়ে বলেছেন, এ বিষয়টি দুই পক্ষ নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ঠিক করে নেবে। আন্তর্জাতিক আদালত সমতার ভিত্তিতে সমুদ্রসীমা ঠিক করায় এ গ্রে এরিয়ার সৃষ্টি হয়। আদালতের রায় অনুযায়ী, বাংলাদেশের সীমানার ৫০ বর্গ কিমি এরিয়া ভারতের মধ্যে ঢুকে গেছে বা ওভার ল্যাপিং হয়েছে। গ্রে এরিয়ার সমুদ্রের তলদেশের সম্পদের একক মালিকানা বাংলাদেশের। আর সমুদ্রের উপরিভাগের সম্পদের মালিকানা উভয় দেশের।

আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক এবং ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক রুকসানা কিবরিয়া এ প্রতিবেদককে বলেন, ২০১৪ সালে সমুদ্রসীমা বিরোধ-সংক্রান্ত হেগের স্থায়ী আদালত থেকে বাংলাদেশ-ভারত সমুদ্রসীমা বিরোধের নিষ্পত্তি ঘটে। এ নিষ্পত্তি খুবই ন্যায়সংগত এবং বাংলাদেশের পক্ষেই ছিল। এটা থেকে মনে হয়, আমরা লাভবান হয়েছি। কিন্তু মানচিত্র দেখলে ভিন্ন চিত্র দেখা যায়। যা হোক, ২০১৯ সালে বাংলাদেশ-ভারত দুই পক্ষ নিজেদের মধ্যে সমুদ্রবিরোধ নিষ্পত্তি করতে রাজি হয়। কিন্তু ওই ভারত সমঝোতার বিষয়ে পরে ভারত তার নিজের স্বার্থে আপত্তি জানিয়েছে।

সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির এ প্রতিবেদককে বলেন, আমার মনে হয়, দুই পক্ষ জাতীয় স্বার্থকে সামনে রেখেই এসব নিষ্পত্তি করবে, কিন্তু সেখানে হয়তো উভয় পক্ষই কমনগ্রাউন্ড খুঁজে পায়নি, সে কারণেই জাতিসংঘের কাছে যাওয়া। আমরা যেহেতু পারছি না, জাতিসংঘ সাহায্য করতে পারে। 
ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহকারী অধ্যাপক ড. কেএম আজম চৌধুরী এ প্রতিবেদককে বলেন, এটা এখন জাতিসংঘের সিএলসিএস কোর্টে নিষ্পত্তির অপেক্ষায়। গ্রে এরিয়া সমুদ্রের মহীসোপানের একটি বিষয়। এ গ্রে এরিয়ায় বাংলাদেশ, ভারত ও মিয়ানমার রয়েছে। তাই এটা দুই দেশের মধ্যে সমাধান করা একটু ডিফিকাল্ট, এটা ত্রিদেশীয় একটা বিষয়। আর এখানে বাংলাদেশের কিন্তু আলাদা কোনো মহীসোপান নেই। গ্রে এরিয়ায় বাংলাদেশ পানি ছাড়া মাটির অংশটুকুও পাবে। অর্থাৎ ২০১৪ সালের রায় অনুযায়ী, গ্রে এরিয়ার মাটির নিচের সম্পদের অধিকারও বাংলাদেশের রয়েছে। এ বিষয় নিয়ে কোর্টের নিষ্পত্তির রায়ে উভয় পক্ষই লাভবান হবে।

shomoyeralo.com/details.php?id=225164


Thursday, April 20, 2023

সন্দ্বীপের সবুজ চর

সন্দ্বীপের সবুজ চর

 সবুজ চর নামেই সবার কাছে পরিচিত এ চরটি। সন্দ্বীপের উত্তরে বামনী নদী ও পশ্চিমে মেঘনা নদীর মোহনাঘেঁষে আমানউলস্না, সন্তোষপুর, দীর্ঘাপাড়-তিনটি ইউনিয়নজুড়ে বিস্তৃত এ চর। উপকূলীয় বেড়িবাঁধের পর যতদূর চোখ যায় বিস্তীর্ণ চর। ছয়টি ঋতুতে ছয়টি ভিন্ন ভিন্ন রূপ নিলেও মূলত শীত ও বর্ষা দুই ঋতুতে সবুজ চর হাজির হয় তার সব সৌন্দর্য নিয়ে।



বর্ষায় নদীতে পানির উচ্চতা বেড়ে গেলে জোয়ারের পানিতে পস্নাবিত হয় চর। বিস্তীর্ণ চরজুড়ে তখন চাষ হয় রাজাশাইল ধান। প্রত্যেক জমির আল কেটে বসানো হয় মাছ ধরার চাঁই। জোয়ারের পানির সঙ্গে নদী থেকে উঠে আসে টেংরা, চিড়িং, কোরাল, কাঁকড়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। ভাটার সময় পানি নেমে গেলে চাঁইয়ের ভেতর আটকা পড়ে মাছগুলো। শত শত চাঁই বসানো থাকে জমিগুলোতে। যেন ধান আর মাছ নিয়ে প্রাকৃতিক সমন্বিত চাষাবাদ। কয়েকটা জমি পরপর মাটি থেকে চার-পাঁচ ফুট উঁচুতে ছাউনি দেয়া মাচার মতো ঘর বানানো থাকে। সেখানেই রাত জেগে মাছ ধরে, চাঁই পাহারা দেয় স্থানীয় লোকজন।

কিছু কিছু জায়গায় দেখা যায় বড় বড় জলাশয়। সেখানে ফুটে থাকে রাশি রাশি শাপলা। শখের বসে শাপলা তোলে গ্রামের মেয়েরা। কেউ খোঁপায় গোঁজে, কেউ বিক্রি করে স্থানীয় বাজারে। জোয়ারের সময় গরু নিয়ে ঘরে ফিরতে দেখা যায় এসব বালিকাদের কাউকে কাউকে।

শীতকালে সম্পূর্ণ ভিন্ন রূপ নিয়ে হাজির হয় সবুজ চর। বর্ষাকালের জল থই থই চরটাকে যেন আর চেনা যায় না তখন। শরতের শুরুতে আকাশে ভেসে বেড়ায় বাউন্ডুলে মেঘ। সবুজ চর থেকে সন্ধ্যার আকাশ দেখার এটাই উপযুক্ত সময়। সূর্য ডোবার পর আকাশের খোলা ক্যানভাসে নানান রঙে ছবি আঁকে প্রকৃতি। আকাশ পরিষ্কার থাকায় সন্দ্বীপের উত্তরে চরের শেষ প্রপ্রন্ত দাঁড়ালে পূর্বদিকে দেখা যায় চট্টগ্রামের পাহাড় আর উত্তরে নোয়াখালী। বেড়িবাঁধের উপরে এসে দাঁড়ালে চরের মাঝখানে বিচ্ছন্ন দ্বীপের মতো ছাড়া ছাড়া কতগুলো বাড়ি চোখে পড়ে। সন্ধ্যা নামলে ওসব বাড়ির ভেতর মিট মিট আলো জ্বলে। একবার মনে হয় তারা, একবার মনে হয় জোনাকি।

হেমন্তে ধান কাটা শেষ হলে বিপুল বিরহ নিয়ে শূন্য পড়ে থাকে মাইলের পর মাইল। এ সময় বিস্তীর্ণ চরজুড়ে কোনো ফসল না থাকায় ছেড়ে দেয়া হয় ভেড়ার পাল। সারাদিন ঘাস খেয়ে রাখালসহ ওদের ঘরে ফেরার দৃশ্য বলে দেয় কাকে বলে গোধূলি সন্ধ্যা, কাকে বলে গড্ডলিকাপ্রবাহ। ভেড়াপালন স্থানীয় লোকজনের অন্যতম আয়ের উৎস। চরের কোথাও কোথাও দেখা যায় মহিষের পাল। নানান রকম পাখির আনাগোনা বেড়ে যায় এসময়। গুলতি হাতে নিয়ে বের হয় গ্রামের দসু্য ছেলেরা। চরের কিছু কিছু অংশে বেড়িবাঁধের ঢালে চাষ হয় মৌসুমী সবজি। বিকালে বেড়িবাঁধের সারি সারি খেজুর গাছে হাঁড়ি বসিয়ে দেয় গাছিরা। সূর্য লাল আবির ছড়িয়ে ডুব দেয় পশ্চিমের বঙ্গোপসাগরে। শীত জেঁকে উঠলে রসের গন্ধে ম-ম করে চরাচর। শুকনো নাড়া জ্বালিয়ে গল্পে মেতে ওঠে চরের মানুষ। কোথায় কোথাও রান্না হয় রসের পায়েস।

শৌখিন ভ্রমণপিপাসুরা সন্দ্বীপের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসময় পরিবার, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়স্বজন নিয়ে ঘুরতে আসেন এখানে। অল্প দামে কিনতে পাওয়া যায় রাজহাঁস। স্কুল-কলেজ থেকে মাইক বাজিয়ে আসে পিকনিক বাস। ছেলেমেয়েদের কলকাকলিতে মুখর হয়ে ওঠে চরের প্রত্যেকটি ধূলিকণা, ঘাস।

মাঝে মাঝে অনেক বছর পর সাগরে সাতদিন সাঁতার কেটে একটা গাছের টুকরোকে আকড়ে ধরে কূলে এসে ভেড়ে অপরিচিত এক লোক।মাছে খাবলে খাওয়া শরীর।নাম বলতে পারেনা,ঠিকানা বলতে পারেনা।উৎসুক জনতার ভীড় জমে লোকটাকে ঘিরে।ঘন হয়ে আসে রাত।সে লোকের গল্প বছরের পর বছর ভেসে বেড়ায় সবুজ চরের বাতাসে।খুব নিরিবিলি একা একা কান পেতে থাকলে ফিসফিস সে গল্প শোনা যায় এখনও।

aijaidinbd.com/feature/rong-berong/76759/সন্দ্বীপের-সবুজ-চর 

সাজিদ মোহন
  ২৪ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

Friday, March 4, 2022

রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসনের ১০ম দিন

রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসনের ১০ম দিন

 

আজ ৪ঠা মার্চ ২০২২ ।  ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের আজ ১০ তম দিন । ইউক্রেন ক্রমাগত পরাজিত হতে যাচ্ছে । ইউক্রেনের পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকে রাশিয়া দখল করে ফেলেছে ।

 


রাশিয়ান সৈন্য বাহিনী ইউক্রেনের উত্তর দিকে রাজধানী কিয়েভ  অভিমুখে ইউক্রেনের উত্তর পশ্চিম দিক হতে অগ্রসর হচ্ছে । ইউক্রেন সৈন্যরা যথেষ্ঠ প্রতিরোধ করলেও রাশিয়ান সৈন্যরা এগিয়ে যাচ্ছে ।  

 

ইউক্রেনের দক্ষিণের সেনা ঘাটি শহর ও শিল্প এলাকা মিকোলাইভ রাশিয়া অধিকার করার দ্বারপ্রান্তে । এই শহর পুরোপুরি রাশিয়া দখল করে নিলে ইউক্রেন অর্থনৈতিকভাবে ও সামরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্হ হবে ।  

 

ইউক্রেনের দক্ষিণ পশ্চিমস্হ কৃষ্ণসাগর তীরবর্তী ওডেসা বন্দর শহরে রাশিয়ান নৌ বাহিনী প্রবেশ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে । ওডেসা বন্দর রাশিয়া দখল করে নিলে ইউক্রেন সমুদ্রপথে বিশ্বের সাথে যোগাযোগ পথ ৯৫% হারিয়ে ফেলবে ।

 

দক্ষিণ-পূবের  গুরুত্বপূর্ণ মাইরিয়োপোল বন্দর শহর রাশিয়ান সৈন্যরা যুদ্ধ করে সফলতা লাভ করেছে ।

 

মারিয়োপোল ইউক্রেনের তৃতীয় নৌ বন্দর ।  রাশিয়া দক্ষিণ দিক থেকে ইউক্রেনকে জলপথ হতে বিচ্ছিন্ন করতে চেষ্টা করছে যাতে বিদেশের কোন যুদ্ধ জাহাজ ইউক্রেনকে সমুদ্রপথে সাহায্য করতে না পারে ।

 

ইউক্রেনের খারকভ শহরে যুদ্ধ চলছে ।

রাজধানী কিয়েভের চারপাশে প্রচুর সৈন্য সামন্ত জড়ো করেছে রাশিয়া । রাশিয়া ইউক্রেনকে চারপাশ দিয়ে ঘিরে ফেলেছে ।

 

রাশিয়া যুদ্ধে বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে । কারণ ইউক্রেন প্রবলভাবে প্রতিরোধ করছে । অপর দিকে রাশিয়া আগ্রাসন চালাচ্ছে । ইউক্রেন একাই মরণপণ লড়াই করে যাচ্ছে । রাশিয়া বিপুল সমরাস্ত্র ও সৈন্য বিসর্জন দিয়েছে ।

 

ইউক্রেনের জনগণ গ্রীক আর্থডক্স খৃস্টান হলেও বিপুল সংখ্যক ইউক্রেনীয় জনগন মুসলিম । এরা ইউক্রেনের আদিবাসী সম্প্রদায় । এরা জাতিগতভাবে ক্রিমিয়ান তাতার ও ভল্গা তাতার জনগোষ্ঠীর লোক । এদের ভাষা ও সংস্কৃতির সাথে তুরস্কে ভাষা ও সংস্কৃতির সাথে মিল রয়েছে ।

 

ইউক্রেনের মুসলিমরাও ইউক্রেনের জনগন হওয়ায় যুদ্ধের শুরু হতে মাতৃভূমিকে রক্ষার জন্য রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরোদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছে । ইউক্রেনের মোট জনসংখ্যা প্রায় ৪ কোটি জনসংখ্যার মধ্যে প্রায় ১০ লাখ মুসলিম । সংখ্যাটি কম নয় ।

 

ইউক্রেনের ক্রিমিয়া অঞ্চলে এক সময় মুসলিমরা ক্রিমিয়া খানাত নামক মুসলিম দেশ কায়েম করেছিলো । রাশিয়ান সম্রাজ্য সপ্তদশ শতকে এই দেশ দখল করে নেয় । পরে ক্রিমিয়া ইউক্রেনের অংশ হয় । কয়েক বছর আগে রাশিয়া আবার ইউক্রেন হতে ক্রিমিয়া দখল করে নেন ।

 


 

Friday, November 19, 2021

৫৮০ বছরের দীর্ঘতম চন্দ্রগ্রহণ আজ ? কীভাবে দেখবেন ?

৫৮০ বছরের দীর্ঘতম চন্দ্রগ্রহণ আজ ? কীভাবে দেখবেন ?

 

 

বর্তমান শতাব্দীর সবচেয়ে দীর্ঘতম আংশিক চন্দ্রগ্রহণ হতে যাচ্ছে আজ। গত ৫৮০ বছরের মধ্যে এতো দীর্ঘ সময়ের জন্য চন্দ্রগ্রহণ আর হয়নি।

সূর্য, পৃথিবী এবং চাঁদ যখন একই সরলরেখায় চলে আসে তখনই চন্দ্রগ্রহণ হয়। সূর্য এবং চাঁদের মাঝখানে পৃথিবী চলে আসে। তখন সূর্যের আলো পৃথিবীতে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে চাঁদের উপরে পড়তে পারে না।



চাঁদ যেহেতু সূর্যের আলোয় আলোকিত, সেজন্য সূর্যের আলো পৃথিবীর দ্বারা আটকে গেলে চন্দ্রগ্রহণ হয়।

চন্দ্রগ্রহণের সময় আমরা চাঁদের পিঠে পৃথিবীর ছায়া দেখি।

 

তবে চন্দ্রগ্রহণের সময় চাঁদ পুরোপুরি অন্ধকার হয়ে যায় না । পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল ভেদ করে কিছুটা আলো চাঁদের উপর পড়ে। তখন অনেকটা লালচে আকার ধারণ করে।

এবারের চন্দ্রগ্রহণের সময় চাঁদের প্রায় ৯৭ শতাংশ পৃথিবীর ছায়া দ্বারা ঢেকে যাবে বলে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন।

 

আংশিক চন্দ্রগ্রহণের হবে ছয় ঘণ্টার বেশি, যেটি গত ৫৮০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘতম সময়।

আশিংক চন্দ্রগ্রহণের সময় চাঁদ অনেকটা লাল আকার ধারণ করবে।

তবে প্রায় পূর্ণ-চন্দ্রগ্রহণ চলবে তিনঘণ্টা আটাশ মিনিট তেইশ সেকেন্ড পর্যন্ত।

বাংলাদেশ সময় শুক্রবার দুপুর ১টা ১৯ মিনিটে মূল চন্দ্রগ্রহণ শুরু হবে।

এবারের চন্দ্রগ্রহণ সবচেয়ে বেশি দৃশ্যমান হবে উত্তর আমেরিকা থেকে। এছাড়া দক্ষিণ আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং এশিয়া থেকেও কিছুটা দেখা যাবে এ চন্দ্রগ্রহণ।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, আকাশ পরিষ্কার থাকলে বাংলাদেশে চন্দ্রোদয়ের পর থেকে গ্রহণ শেষ হওয়া পর্যন্ত আংশিক দেখা যাবে।

সেক্ষেত্রে ঢাকা থেকে দেখা যাবে বিকেল ৫টা ১৩মিনিট ৪২ সেকেন্ড থেকে ছয়টা পাঁচ মিনিট ৩০ সেকেন্ড পর্যন্ত।

 

 

https://www.bbc.com/bengali/news-59342337

 

চাঁদ এবং পৃথিবী নিজ নিজ কক্ষপথে চলার সময় সূর্য, পৃথিবী ও চাঁদ যখন একই সরলরেখায় আসে এবং সূর্য ও চাঁদের মাঝখানে পৃথিবীর অবস্থান হয় তখন পৃথিবীর ছায়া গিয়ে পড়ে চাঁদের ওপর। পৃথিবী থেকে দেখলে কিছু সময়ের জন্য আংশিক অদৃশ্য হয়ে যায় চাঁদ। এই ঘটনাকেই চন্দ্রগ্রহণ বলা হয়।

আরো তথ্য:

জেনে রাখা ভাল :

চন্দ্রগ্রহণ ও সূর্যগ্রহণ এর মধ্যে পার্থক্য:

১. পৃথিবী ও চন্দ্রের মাঝে যখন সূর্য আসে তখন চন্দ্রগ্রহণ হয়।

একইভাবে পৃথিবী ও সূর্যের মাঝে চন্দ্র আসলে সূর্যগ্রহণ হয়।

২. যখন সূর্যগ্রহণ হয় তখন যেটি ঘটে তা হলো, সূর্যকে যা আড়াল করে দেয় সেটি হল চাঁদ। চন্দ্রগ্রহণ হল ঠিক এর বিপরীত অবস্থা।

৩. সূর্যগ্রহণ হয় অমাবত্সায় বা চান্দ্রমাসের শেষ দিন । চন্দ্রগ্রহণ হয় পূর্ণিমায় বা চান্দ্রমাসের ১৪ বা ১৫ তারিখে ।

৪. সূর্যগ্রহণ দিনের বেলায় টেলিস্কোপে সানফিল্টার লাগিয়ে পর্যবেক্ষণ করতে হয় ।

অপর দিকে চন্দ্রগ্রহণ রাতের বেলা খালি চোখে দেখা যায় ।

কিভাবে চন্দ্রগ্রহণ দেখবেন?

সূর্যগ্রহণের মতো চন্দ্রগ্রহণ দেখতে কোনও আলাদা সতর্কতার প্রয়োজন নেই। খালি চোখেই এই গ্রহণ দেখা যেতে পারে। তাতে চোখের ক্ষতির কোনও আশঙ্কা নেই। তবে টেলিস্কোপের সাহায্যে এই গ্রহণ দেখলে নিঃসন্দেহে গ্রহণের সৌন্দর্য আরও তীব্র ভাবে ধরা পড়বে।

https://www.bau.ac/2020/07/blog-post.html

 

Saturday, June 26, 2021

বরগুনা দক্ষিণাঞ্চলের এক্সক্লুসিভ টুরিস্ট জোন

বরগুনা দক্ষিণাঞ্চলের এক্সক্লুসিভ টুরিস্ট জোন

বরগুনার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যভরা স্থানগুলোর সঙ্গে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার কুয়াকাটা, গলাচিপার সোনার চর ও সুন্দরবন মিলে গড়ে উঠতে পারে একটি এক্সক্লুসিভ ট্যুরিস্ট জোন। বরগুনার তালতলী উপজেলার সোনাকাটায় রয়েছে ইকোপার্ক। এখানে ছোট-বড় ১২টি কিল্লা, ৭টি পুকুর রয়েছে। হরিণ বেষ্টনী, কুমির প্রজনন কেন্দ্র ও শুকর বেষ্টনীসহ একটি পিকনিক স্পট রয়েছে। ফকিরহাট বাজারের কাছাকাছি একটি ব্রিজের মাধ্যমে সোনাকাটা জঙ্গলে যাওয়া যায়। এটাই পর্যটকদের প্রবেশদ্বার। যোগাযোগ এবং থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা উন্নত হলে এটি হবে পর্যটনের চমৎকার স্থান।
সোনাকাটার পূর্বে কুয়াকাটা, পশ্চিমে সুন্দরবন ও হরিণবাড়িয়া, উত্তরে রাখাইন পল্লী এবং দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর। সোনাকাটা থেকেও উপভোগ করা যায় সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত। বঙ্গোপসাগরের তীরঘেঁষা বরগুনা জেলাটি ভৌগলিকভাবে দক্ষিণ বাংলার পর্যটন কেন্দ্রগুলোর মধ্যস্থলে অবস্থিত। 

বরগুনার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যভরা স্থানগুলোর সঙ্গে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার কুয়াকাটা, গলাচিপার সোনার চর ও সুন্দরবন মিলে গড়ে উঠতে পারে একটি এক্সক্লুসিভ ট্যুরিস্ট জোন। বরগুনা জেলার পর্যটন স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো : সদর উপজেলার গোড়াপদ্মা, ছোনবুনিয়া, বাইনচটকির চর, খাকদোন নদীর মোহনা, তালতলীর রাখাইন পল্লী, আশারচরের সমুদ্র সৈকত, শুঁটকি পল্লী, সোনাকাটা, পাথরঘাটার লালদিয়ার চর। এছাড়া সুন্দরবনের কটকা, কচিখালী, ডিমের চর এবং দুবলার চর, কুয়াকাটা, সোনারচরসহ আরও কিছু স্থান বরগুনার একেবারে কাছে। 

কুয়াকাটা পটুয়াখালীর কলাপড়া উপজেলাতে অবস্থিত হলেও ভৌগোলিকভাবে ১৯৬৯ সালেও বরগুনা জেলার অন্তর্ভূক্ত ছিল। স্বাধীনতার পর কলাপাড়াকে পটুয়াখালীর অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কিন্তু সড়ক পথে বরগুনা থেকে কুয়াকাটার দুরত্ব পটুয়াখালীর তুলনায় কম। ফলে পর্যটকরা বরগুনা ভ্রমণের মধ্যে কুয়াকাটাকেও রাখতে পারেন। 

পাথরঘাটা উপজেলার সর্ব দক্ষিণে হরিণঘাটা চর। এ চরে রয়েছে হরিণ ও বন্য শুকর। রয়েছে দীর্ঘ সৈকত। সৈকতে দাড়িয়ে সূর্যাস্ত উপভোগ করা যায়। হরিণঘাটার গহীন ঝাউবনের নিচে বসে শুনতে পাবেন বাতাসের শো শো শব্দ। সমুদ্র দেখলে মনে হবে স্বপ্নের মাঝে রয়েছেন। রাতের আঁধারে হরিণের পাল এসে ঝাউবনের নিচে আশ্রয় নেয়। তাও দেখার মতো দৃশ্য। 

বরগুনার বেতাগী উপজেলায় রয়েছে মুঘল আমলের ঐতিহ্যবাহী বিবিচিনি শাহী মসজিদ। মূল ভূমি থেকে ৩০ ফুট উচ্চতায় স্থাপিত এক গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদটি নির্মাণ করেছেন আধ্যাত্মিক সাধক হযরত শাহ নেয়ামতুল্লাহ (র.)। ১৬৫৯ সালে পারস্য থেকে ইসলাম প্রচারের জন্য তিনি এ অঞ্চলে আসেন। সপ্তদশ শতাব্দীতে নির্মিত মসজিদটি দৈর্ঘ্যে ৩৩ ফুট ও প্রস্থে ৩৩ ফুট। দেয়াল ৬ ফুট চওড়া। 

সুন্দরবনের সব স্পটে যেতে হলে পুরো দিনটাই লঞ্চে ভ্রমণ করতে হবে। বরগুনা থেকে সুন্দরবন ভ্রমণ খুবই সহজ। সকালে গিয়ে বিকেলে বরগুনায় ফিরে আসা যায়। অথবা ২-৩ দিনের খাবার নিয়ে লঞ্চেও থাকা যায়। সুন্দরবনের কটকাসহ আশপাশের স্পটগুলো হলো কচিখালী, ডিমের চর ও দুবলার চর। ঝাঁক বাঁধা হরিণ ও বানরসহ ভাগ্য প্রসন্ন হলে দেখা যাবে রয়েল বেঙ্গল টাইগার। রাতে কটকার অভয়ারণ্যে ভিড় করে হরিণের পাল। 

কুয়াকাটাকে নতুন করে কাউকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কিছু নেই। সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দুটোই উপভোগ করা যায় এর সৈকতে। দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত, রাখাইন ঐতিহ্য, শুঁটকি পল্লী, ঝাউবন ও ইকোপার্কসহ নানা কারণেই কুয়াকাটা দেশের অন্যতম বৃহত্তম পর্যটন কেন্দ্র। কুয়াকাটা থেকে বরগুনার দূরত্ব অন্যান্য জেলার চেয়ে খুবই কম। তাই কুয়াকাটা ও বরগুনা মিলে একটি সমন্বিত পর্যটন এলাকা গড়ে উঠতে পারে। 

এছাড়াও বরগুনা সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে ভ্রমণ স্পট। গোড়াপদ্মায় গড়ে উঠেছে ছোট আকারের পর্যটন কেন্দ্র। বিকেলের অসংখ্য মানুষ এ সব স্থানে ভিড় করেন। বরগুনা শহর থেকে ৬ কিলোমিটার পশ্চিমে রয়েছে প্রাকৃতিক জঙ্গল। চারদিকে নদীবেষ্টিত ওই জঙ্গলে রয়েছে হরিণ। পিকনিকে জন্য এটি অপূর্ব সুন্দর স্পট। এ ছাড়া লবণগোলা, ছনবুনিয়া, কুমিরমারা ও বড়ইতলাসহ বিভিন্ন জায়গায় গড়ে উঠা ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট পর্যটনের জন্য আকর্ষণীয় স্থান। একসঙ্গে অনেক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে বরগুনা একটি অসাধারণ জায়গা। 

তবে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ করা গেলে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে অন্যান্য জায়গার তুলনায় বরগুনা কোনো অংশেই কম হবে না।এমন কি এই জেলাকে ঘিরে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে গড়ে উঠতে পারে একটি এক্সক্লুসিভ ট্যুরিস্ট জোন। উত্তাল সমুদ্রের ঢেউ আর একই স্থানে সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয়, দেখা যায় পটুয়াখালীর কুয়াকাটায়। 

আর কুয়াকাটার পশ্চিমে বরগুনার তালতলী উপজেলার সোনাকাটায় নির্জন গভীর অরণ্য। এখানে রয়েছে মায়াবী চিত্রা হরিণের পাশাপাশি মেছো বাঘ, কুমির,কাঠ বিড়ালিসহ বিভিন্ন বন্য প্রাণী। এরপরই পাথরঘাটা উপজেলার লালদিয়া যেখানে রয়েছে ম্যানগ্রোভ বন। কাঠের পাটাতনের ব্রিজ ধরে গভীর বনে হারিয়ে যাওয়ার সুযোগ। শুধু ব্রিজ নয়, টাওয়ারে উঠে বা ছোট নৌকা ভাড়া করে বন দেখার সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে এখানে। 

দক্ষিণে এ তিনটি পর্যটন কেন্দ্র পাশাপাশি হলেও দুটি নদী বিচ্ছিন্ন করেছে কেন্দ্রগুলোকে। আর একটি কেন্দ্র থেকে আরেকটিতে যাওয়ার নেই কোনো ব্যবস্থা। বিশখালী ও বলেশ্বর নদীর মোহনায় বঙ্গোপসাগরের উপকূলে এমন এক চমৎকার বন দাঁড়িয়ে আছে বরগুনার পাথরঘাটায়। হরিণঘাটার বন নামে পরিচিত এই বনে দিনদিন বেরে চলছে। ২০ হাজার একর জুড়ে দৃষ্টিনন্দন এই বনে প্রাকৃতিক কেওড়া, গেওয়াসহ সৃজিত সুন্দরী ও ঝাউবন। বন অধিদপ্তর ১৯৬৭ সালে হরিণঘাটা বন সম্প্রসারণে পরিকল্পিত বনায়ন শুরু করে। পরে ২০১৩ সালে এখানে ১০০ হেক্টর এলাকাজুড়ে সমৃদ্ধি কর্মসূচির আওতায় নতুন বন সৃজিত হয়। বনের ভেতরে পর্যটকদের পায়ে চলার জন্য তৈরি কর হয়েছিল (ফুট ট্রেইল) বা সেতু আর এই মায়ায়ই দর্শনার্থীদের টানছে এখানে। আর এই ফুট ট্রেইল এখন ভেঙ্গে নেই বললেই চলে। এখানে চলতে গেলে মৃত্যুর ঝুকি নিয়ে চলতে হয়। কারন, এই ফুট্রেইলের পায়ে চলার পথ নির্মাণের ফলে হরিণঘাটা বন আকর্ষণীয় পর্যটনের সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। বনের ভেতর উঁচু পিলারে তৈরি করা হয়েছে চার তলা ওয়াচ টাওয়ার যার উপর দাড়িয়ে মানুষ নিরাপদ ও স্বচ্ছন্দে বনের প্রাণ-প্রকৃতি ও সাগরতীর দর্শনের সুযোগ পাচ্ছে। বনের ভেতর নির্মাণ করা হয়েছে বিশ্রামাগার ও গোলঘর যেখানে পর্যটকরা বিশ্রাম নিতে পারে। এই বনের ভিতরের দৃশ্য দেখার জন্য ফুটট্রেইল নির্মান করার হয়েছে পর্যটকদের জন্য। হরিণঘাটা থেকে লালদিয়া সমুদ্রপাড় পর্যন্ত যেতে ৯৫০মিটার ফুট-ট্রে ব্রিজ, ৪টি পাকা গোলঘর, একটি ব্রিজ করা হয়েছে। 

ত্রিমুখী এই পর্যটন এলাকা সুন্দরবন ও কুয়াকাটার মাঝখানে। লালদিয়া, সোনাকাটা ও কুয়াকাটা নিয়ে সরকারের পর্যটন জোন করার পরিকল্পনা রয়েছে।

Tuesday, December 1, 2020

গাজীপুরের ফুলদী গ্রামের তেঁতুল গাছ

গাজীপুরের ফুলদী গ্রামের তেঁতুল গাছ

গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের ফুলদী গ্রামের বেলাই বিল পাড়ে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে আনুমানিক ২৫০ বছরেরও বেশি বয়স্ক তেঁতুল গাছটি। গাছটি এক নজর দেখতে বিভিন্ন জায়গা থেকে ছুটে আসে মানুষ। ডালপালা ছড়িয়ে বেশ খানিকটা জমি দখল করে আছে গাছটি। দূর থেকে দেখে গাছটিকে কখনও মনে হয় বিরাট বটগাছ আবার কখনও মনে হবে তেঁতুল বাগান।
বৃদ্ধ এই গাছটির নিচে প্রতিদিন নানা বয়সী মানুষ শীতল হাওয়ায় প্রাণ জুড়ান। গাছটির পাশেই ফুলদী গ্রামের ঈদগাহ, ফুলদী গাউসিয়া সুন্নীয়া মাদরাসা, ফুলদী হাফিজিয়া মাদরাসা ও ফুলদী জামে মসজিদ। বিশাল তেঁতুল গাছটির মোটা ডালগুলো আশপাশের জমিতে ছড়িয়ে আছে। প্রতি বছর গাছটিতে তেঁতুলও হয় মোটামোটি ভালোই। স্থানীয়দের সুবিদার্থে তামান সরকার নামে এক সৌদী প্রবাসীর অর্থায়নে গাছটির চারপাশপাকা করা হয়েছে। গাছটির বর্তমান মালিক ফুলদি ঈদগাহ মাঠ কর্তৃপক্ষ।
টঙ্গি স্টেশন রোড বাস স্টপ হতে টঙ্গি ঘোড়ারশাল সড়ক হয়ে কাপাসিয়া মোড় বাস স্টপ নেমে রাস্তার বাম দিকে উত্তর দিকে কালিগঞ্জ কাপাসিয়া সড়ক দিয়ে ফুলদী গ্রামে গেলেই তেঁতুল গাছটি দেখা যাবে ।

Monday, November 30, 2020

বর্ষায় বেলাই বিল রূপ-সৌন্দর্য্য

বর্ষায় বেলাই বিল রূপ-সৌন্দর্য্য

ঢাকা কাছে উন্নত ভূমির যেসব বিল রয়েছে তন্মধ্যে বেলাই বিল রূপ-সৌন্দর্য্যে অনন্য। নিজস্ব গাড়িতে টঙ্গী-পুবাইল হয়ে কানাইয়া যেতে সময় কম লাগবে
৪০০ বছর পূর্বেও বেলাই বিলে কোন গ্রামের অস্তিত্ব ছিল না। খরস্রোতা চেলাই নদীর কারণে বিলটিও খরস্রোতা স্রোতস্বিনীরূপে বিরাজমান ছিল। কিংবদন্তি আছে, ভাওয়ালের ঐ সময়ের ভূস্বামী ঘটেশ্বর ঘোষ ৮০টি খাল কেটে চেলাই নদীর জল নিঃশেষ করে ফেলেন। তারপরই এটি প্রকাণ্ড বিলে পরিণত হয়। বিশাল এই বিলটির কোনো কোনো স্থানে প্রায় সারাবছরই পানি থাকে, তবে বর্ষায় এর রূপ বেড়ে যায় অনেকাংশে। বর্ষা মৌসুমে জেলেরা বিলে চারপাশে ডাঙ্গি খনন করে। এখানে ধরা হয় মাছ। আর শুষ্ক মৌসুমে বিলটি হয়ে উঠে একফসলী জমিরূপে। তখন বোরো ধানের চাষাবাদ করা হয়। বর্তমানে বিলটির আয়তন আট বর্গমাইল এলাকায় বিস্তৃত হলেও পূর্বে আরও বড় ছিল। বাড়িয়া, ব্রাহ্মণগাঁও, বক্তারপুর ও বামচিনি মৌজার গ্রামগুলোকে ঘিরে রেখেছে এই বিল। পড়ন্ত বেলায় কানাইয়া বাজারের কাছে তৈরি হওয়া নতুন সেঁতুর ওপর দাঁড়িয়ে এর সৌন্দর্য্য উপভোগ করা যায়। শাপলা-শালুকে ভরা বেলাই বিল। সাদা ও নীল শাপলার ছড়াছড়ি। নারীদের শস্য ঝাড়াইয়ের দৃশ্যও চোখে পড়বে। বিলে বুকে স্বচ্ছ টলটলে পানি। এখানকার গ্রামের মাটি লাল। লাল মাটিতে লাউ খুব ভালো জন্মায়। আর রয়েছে সারি সারি তালগাছ যা নৌকায় বসেদূরের তালগাছ দেখতে বেশ সুন্দর দেখায়। ইঞ্জিনচালিত ও ডিঙি নৌকার দুটোই পাওয়া যায়। তবে ইঞ্জিনের শব্দের চেয়ে শব্দবিহীন ডিঙি নৌকাই উত্তম। বিলের চারপাশে দ্বীপের মতো গ্রাম। বামচিনি মৌজা বেলাই বিলের তেমনি একটি দ্বীপগ্রাম। এর বিশ্বেষত্ব হচ্ছে এক মৌজায় এক বাড়ি যা অন্য কোথাও আছে কি-না সন্দেহ!

Tuesday, October 13, 2020

Monday, January 27, 2020

সোনকাটা সমুদ্র সৌকত

সোনকাটা সমুদ্র সৌকত

সোনাকাটা সমুদ্র সৈকত বরগুনা জেলার তালতলীতে অবস্থিত।


 

সোনাকাটা সমুদ্র সৈকত ও সোনাকাটা ইকোপার্ক একই স্থানেই অবস্থিত। এখান থেকে ইকোপার্কের অনাবিল সৌন্দর্যসহ সমুদ্র সৈকতের সূর্য অস্ত সুন্দর ভাবে দেখা যায়।